Headlines News :
Home » » বিজ্ঞানের শুরু

বিজ্ঞানের শুরু

Written By ভোরের বার্তা on সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ | ৪:১০ PM



আমরা যেন ভুলে না যাই অরণ্যচারী আদিম মানুষদের কথা। যারা থাকতো পাহাড়ি গুহাতে। পাথর ঘষে বানাতো অস্ত্র। শিকার করতো পশু। পথরে পাথরে ঘষে জ্বালিয়েছিল আগুন। সেই আগুনে নিহত পশুর মাংশ পুড়িয়ে ঝলসে খেত।
অন্ধকারের বুকে জ্বলে উঠলো আগুন। সেই থেকেইতো বিজ্ঞানের শুরু। এগিয়ে চললো সভ্যাতা। বাড়তে লাগলো বিজ্ঞান চেতনা। বৃদ্ধি পেতে লাগলো মানুষের কৌতুহল আর জিজ্ঞাসা। বেঁচে থাকাকে করতে চাইলো অর্থপূর্ণ। তাইগ্রিস আর ইউফ্রেতিস নদীর তীরের মাঝের স্থানের নাম মেসোপটেমিয়া। সেখানে আক্কাদীয় ও সুমেরীয় নামে দুই সভ্য জাতির বিকাশ ঘটে। তারা গড়ে তোলা ব্যাবিলনীয় নামের এক উন্নত সভ্যতা।
      তাদের মাঝে ছিল বিজ্ঞান চেতনা। তারা সোনা, রূপা, তামা ও অন্যান্য ধাতুর নিস্কাশন পদ্ধতি জানতো। সুমেরীয়রা খাল কেটে দেশে ব্যাপক সেচ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। আবিস্কার করেছিল চাকা। বলা হয়ে থাকে চাকার আবিস্কার সভ্যতার অগ্রগতির ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। সুমেরীয়রা চমকার পদ্ধতিতে কাপড় বয়ন করতে পারতো। মেসোপটেমিয়ার পুরোহিতেরা আকাশ পর্যবেক্ষন করতে গিয়ে তৈরি করলো বর্ষপঞ্জী। তারা লক্ষ করলো গ্রহ নক্ষত্রদের গতি ও চলন খুব নিয়ম বাঁধা। তারা তৈরি করেছিলেন সৌর ক্যালেন্ডার। আবিস্কার করেছিলেন লিপি। সুমেরীয়রা অন্যের সাথে ব্যবসা বানিজ্য করতো। তারা লেনদেনের হিশেব রাখার জন্যে লেখার কৌশল আবিস্কার করলো। তারা আঁকতো ছোট ছোট ছবি। তারের মতো লিপি। সবচাইতে প্রাচীন লেখা পাওয়া গেছে কিশ নামক স্থানে। চুনা পাথরের চাকতির ওপর খোদাই করা। সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগের চিত্র লিপি।
      সুমেরের নিপপর শহরের একটি মন্দির খুড়ে পাওয়া গেছে ৫০ হাজার মাটির চাকতি।
সভ্যতার নতুন বিকাশ ঘটলো নীল নদের তীরে। প্রতি বছর বন্যার সময় সেখানে বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে যেত। পানি সরে যাওয়ার পর জমির সীমানা বের করতে গিয়ে সেখানে জ্যমিতি শাস্ত্রের উদ্ভব ঘটলো।
      প্রাচীন মিশরীয়রা বিশ্বাস করতো নয়ক্সেটিস শহরে বাস করে থথ নামে এক দেবতা। যারা মাথাটি ছিল আইবিস পাখির ঠোঁটের মতো। শরীর ছিল মানুষের মতো। তারা বিশ্বাস করতে থথই আবিস্কার করেছে মিসরের সমস্ত জ্ঞান বিজ্ঞান। অন্ক আর জ্যামিতি।
প্রথম যে  আদি বিজ্ঞানীরা নাম পাওয়া গেছে তার নাম ইমহোতেপ। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে তিনি ছিলেন মিশরের রাজ চিকি
তাকে ভাবা হতো চিকিৎসা বিজ্ঞানের দেবতা। অসাধারণ গুণী ছিলেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন ইমহোতেপ। বিভিন্ন বিষয়ে ছিল কৌতুহল। স্কাপত্যকলায় পারদর্শী। মিশরের প্রথম পিরামিডের পরিকল্পনা নকশা তাঁর। উমহোতেপ ফারাওদেও দেহকে মমি কওে রাখার পদ্ধতি চালু করেন। জন্যে আশ্চর্য ড়্গমতার এক ধরণের মলম ব্যবহার করতেন। মমি তৈরির উদ্দেশ্য ছিল মৃত্যুও পরও দেহকে অবিকৃত রাখা।
          ফারাওদের শবকে নিয়ে যাওয়া হতো নীল নদেরপশ্চিম তীরে। সেখানে তাঁবুর ভেতরে শবদেহ কাটা হতো ইথিওপিয়ান ধারালো পাথর দিয়ে। শরীরের ভেতরের অন্ত্রনালী বের করে নিয়ে দেহের খালি গর্তগুলো তরল রেসিন দিয়ে মাখানো হতো। শরীরের পানির অংশকে অপসারণ করা হতো বিশেষ প্রক্রিয়ায়। নানা প্রকার সুগন্ধি মশলা দিয়ে দেহটাকে খালি করা হতো। দেহের চারপাশে রেসিনের আসত্মর দেয়া হতো। বিজ্ঞানীরা এখন মমি তৈরির রহস্য বের করার চেষ্টা করছেন।
          ১৯৭৬ সনে দ্বিতীয় রামেসিসের মমিকে ফ্রান্সে নিয়ে গিয়ে এক্সরে করানো হয়। তেজস্ক্রিয়া কোবাল্ট ২০ বিকিরনের সাহায্যে সেই মমির জীবানু ধ্বংস করা হয়। বিজ্ঞানীরা মাইক্রোস্কোপ আর কম্পিউটাররের সাহায্যে এগুলোর গবেষণা করেছেন।
          প্রাচীন মিশরে ইমহোতেপের নির্দেশে মাপ মতো পাথর কেটে স্থাপত্যের ব্যবহার শুরু হলো। তিনি নীল নদের বদ্বীপের দড়্গিনে মেমফিস শহরে রাজধানী নির্মাণ করেন। কাজ করতে গিয়ে তাকে নীল নদের প্রবাহকে ঠেলে সরিয়ে দিতে হয়েছে। তাকে তাই বলা যেতে পারে পৃথিবীর প্রথম হাইড্রোলিক প্রকৌশলী। মিশরের বিখ্যাত আসোয়ান বাধের মডেল কড়্গে তার মূর্তি রাখা আছে। প্রাপিরাসের পাতায় ইমহোতেপ অনেক কিছু লিখে গেছেন।
          একটি পুথিতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে এভাবে, লেখক হবার সংকল্প গ্রহন কর ইমরতের চেয়ে মূন্যবান দূর্গের চেয়ে সুন্দর কি? গ্রন্থ
          জেডেফেরার সমান কেউ আছে? ইমহোতেপের সমতুল্য কে আছে আমাদের মধ্যে? মানুষের জ্ঞান এমনিভাবে বিকশিত হয়েছে। দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে কৌতুহল। রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে বিস্মিত হয়েছে মানুষ। নক্ষত্র খচিত আকাশ  তার মাঝে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। খ্রীষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীর শেষভাগে গ্রীক জ্যোতির্বিদ হিপারকাস সর্বপ্রথম তারার তালিকা প্রণয়ন করেন।
          তাঁর তালিকাতে ১০২৫টি তারার স্থান নির্দেশ করা হয়েছে।
ভারতবর্ষে বিজ্ঞান চর্চার শুরম্ন খ্রিষ্টের জন্মের আড়াই থেকে তিন হাজার বছর আগে। সিন্ধু তীরের মানুষদের যথেষ্ট ব্যবহারিক জ্ঞান ছিল। হরপ্পার নগর পরিকল্পনায় এর নির্দশন রয়েছে। সে নগরীর পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা ছিল চমৎকার। তারা ধাতু সঙ্করের ব্যবহার জানতো। তুলোর চাষ করতো।
          প্রাচীন ভারতের একটি শ্রেষ্ঠ আয়ুর্বেদ গ্রনে' নাম চরক সংহিতা। তাতে আছে বিভিন্ন খনিজ, প্রানিজ উদ্ভিদ পদার্থের গুনাগুনের কথা। রয়েছে মানব দেহের শারীরস'নের বর্ণনা। শরীরে যদি জীবানু ঢুকে যায় তা হলে কি ঘটতে পারে তার বিবরণও আছে। তখন খুব নিষ্ঠার সাথে লেখা হতো এসব গ্রন্থ মানুষের যাতে কল্যাণ হয়। শুভ হয়।
          সুশ্রম্নত সংহিতা আরেকটি অসাধারণ গ্রন্থ বিষয় শল্য চিকিৎসা। এতে অস্রোপাচারের শতাধিক যন্ত্রের বর্ণনা আছে। চৌদ্দ রকমের পট্ট বন্ধনীয় কথা আছে। পস্নাষ্টিক সার্জারী জাতীয় চিকিৎসার বিবরন আছে।
৪৬৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের পাটালিপুত্রের কাছে কৃসুমপুর গ্রামে আর্যভট্টের জন্ম। জ্যোর্তিবিজ্ঞানে অসাধারণ মেধার পরিচয় দিয়েছিলেন। মাত্র ২৩ বছর বয়সে তিনি গণিত জ্যোর্তিবিদ্যার একটি বই লেখেন। পৃথিবী যে নিজের অড়্গের উপর মোটামুটি ২৪ ঘন্টায় এববার ঘুরে আসে তিনি প্রথম তার উলেস্নখ করেন।
১১১৪ খ্রিষ্টাব্দে জন্ম ভাস্করের। ছত্রিশ বছর বয়সেসিদ্ধানত্ম শিরোমণি নামে একটি গ্রন' লেখেণ। তাতে বীজ গণিত পাটি গণিত সম্পর্কে অনেক মৌলিক তত্ত্ব রয়েছে। কোনও নির্দিষ্ট রাশিকে শুণ্য দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল কি তিনি তা নির্ণয় করেছিলেন। নিখূঁতভাবে।
----- সংগ্রহ।

ফটোশপ শিখার জন্য ভিজিট করুন (www.arnob-multimedia.com)
Share this post :
 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. অজানা বিশ্ব - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger